বাংলা সিরিয়াল


এইযে দাদা,ভাই,কাকা,বাবা আপনারা কি নিপীরিত,লাঞ্ছিত বাড়ির টিভি রিমোট থেকে?তাহলে আপনাদের মনে মলম লাগাতে।আজকের টপিক বাংলা সিরিয়াল।
    শুরু করি বাংলা সিরিয়াল তইরি নিয়ে-প্রথমে একটা  নায়ক, একটা নায়িকা আর গাঁজা খেয়ে লিখতে বসা প্রচণ্ড ন্যাকামি যুক্ত একটা স্ক্রিপ্ট। সেই নায়কের আবার অনেক ভাগ আছে যেমন শহরের নায়ক, অন্ধ নায়ক,বোকা হাবা নায়ক,সব জান্তা নায়ক।
আর নায়িকাও ঠিক সেরকমই গ্রামের অশিক্ষিত গরিব নায়িকা, বড়লোক বাবার ন্যাকা মেয়ে নায়িকা আবার মধ্যবিত্ত ঘরের প্রতিবাদী  নায়িকা সে কিন্ত সব বিশয়ে পারদর্শী। নায়ক থাকবে, নায়িকা থাকবে অথচ ভিলেন থাকবে না এটা কেমন জানো লাগে না? তাই গল্প কে টেনে লম্বা করার জন্য একটা  স্মার্ট, শিক্ষত,ক্ষমতাশালি ভিলেন।যদিও এখন পুরুষ ভিলেনের থেকে মহিলা ভিলেনের দাপট বেশি দেখা যায়। আজকাল  তো  আবার ছোট বাচ্ছা গুলোকে ইচরেপাকা করে হাসাচ্ছে কাঁদাচ্ছে বা পাকা পাকা কথা বলিয়ে  trp বাড়াচ্ছে।
এবার আসি সিরিয়ালের প্রকারভেদে- সব সিরিয়াল প্রায় একি রকমএর।সেই একি গল্প শহরের স্মার্ট ছেলে গ্রামে গিয়ে একটা অশিক্ষিত গ্রাম্য মেয়েকে বিয়ে করে এনে বাড়িশুদ্ধ  লোকের অপমান সহ্য করাচ্ছে,সারাদিন কাঁদতে কাঁদতে  দিন যাচ্ছে, কেউ আবার বাড়ির কাজের মহিলা কে বিয়ে করছে তারপর তারা বিভিন্ন পরিস্তিতির শিকার হচ্ছে,তারপর  হঠাত একদিন দেখা গেল লুকিয়ে লুকিয়ে পড়াশুনো করে ডাক্তার,পুলিশ, আইপিএস বা উকিল হয়ে এওয়ার্ড নিচ্ছে,আমরা তো শালা সারাদিন পড়েও একটা চাকরী জোটাতে পারিনা আর এরা সারাদিন কেঁদে কেঁদে আর শাশুরির সাথে ঝগড়া করেও এওয়ার্ড পেয়ে যাচ্ছে - ইয়ার্কি নাকি?কোন সিরিয়ালে তো নায়কের ৭০ টা বিয়ে নাহলে চলেই না, ভাই তোরা এত মেয়ে পাস কোথা থেকে- আর এই জন্যই আমরা এখনও সিংগেল।কোন সিরিয়ালে আবার হাবা, অসুস্থ স্বামী কে ভালো করে যেই নায়িকা শ্বশুরঘরে একটু সুনাম পেয়েছে সাথে সাথে এন্ট্রি নিল স্বামীর ছোটবেলার বান্ধবী। ঠাকুমা দিদিমাদের কথাও রাইটার রা ভুলে যায়নি - ভক্তিমুলক সিরিয়ালেও এত ছেয়ে গেছে যে রাতের বেলা টিভির দিকে পা দিয়ে শুতেও ভয় লাগে।
আমাদের শালা পুকুরে সাতার কাটতে ভয় লাগে কিছু সিরিয়ালে সাত সমুদ্র তের নদি পার করে,আকাশে বাতাসে উড়ে লম্ফ কেটে একে ওকে মেরে রাক্ষস ভুত মেরে, গাছের সাথে ফুলের সাথে কথা বলে নায়িকা কে বাঁচিয়ে মা বাবার প্রান ফিরিয়ে আনছে

।এটা না চালালে বাচ্ছাগুলর খাওয়া দাওয়া বন্ধ হয়ে যায় - উফফ আর পারা যায় না।
এবার আসি অত্তাচারিত মানুষগুলার কথায়-আপনার হাতপা কেটে যাক তাতে আপনার বউ বা মায়ের কিছু বলার নেই কিন্তু নায়ক বা নায়িকার নখ টাও ভেঙে গেলে সেটা আপনাকে শুনতে হবে - মাঝে মাঝে মনে হয় যে আমরা মনে হয় সৎ মায়ের কাছে আছি।যত বড়ই নিউস বা খেলা হক না কেন রিমোট আপনার হাতে আসবেনা- জন্মসুত্রে রিমোট এর অধিকার শুধু মেয়েদের।হাজার আপত্তি সত্ত্বেও আপনার সন্ধ্যার রুটিন হবে চপ মুড়ি  আর স্টার জলসা বা জি বাংলার সিরিয়াল।আপনি অনুষ্ঠান বাড়িতে যান বা মহিলা গল্পের আড্ডায় যান একটাই টপিক "এই কাল ওটা দেখেছিস?" ইস "ওটা ত না বল্লেও পারতো "।আপনি সঠিক সময় খাবার পান আর বা পান টিভি কিন্তু সঠিক সময়েই চলবে।আপনি তিরথের কাক হয়ে বসে আছেন একটু নিউস দেখবেন বলে হঠাত শুনতে পেলেন আপনার বউ বা মা ইমোশনাল হয়ে বলে উঠল "ঠিক হয়েছে" বা "আরে সত্যি টা বলে দে" বা "ইমা ওর ত কোন দোস ছিল না"।বছরের পর বছর ধরে একি কাহিনী যেই মেয়েটা ছোট নায়িকা ছিল সে বড় হয়ে নায়িকা হয়ে প্রতিকুলতা সহ্য করে বিয়ে করে মা হয়ে তারপর ঠাকুমা হয়েও সিরিয়াল শেস হয়না - শালা এবার কি মরে গিয়ে ভুত হয়ে সিরিয়াল টা করবি?  আচ্ছা দাদা রাইটার রা কি সিরিয়াল গুলাকে এলাস্টিক মনে করে? টেনে টেনে বাড়িয়ে যাচ্ছে তো  যাচ্ছেই।

তারপর প্রতিটা সিনে বিশেষ  কোন কথা হলেই সবার পা থেকে মাথা অব্ধি লুক ৩/৪ বার দেখাতেই হবে।এত ন্যাকামি শেখে কোথা থেকে? ও বউদি ন্যাকামি কোথায় কিনতে পাওয়া যায় বলুন ত? আমি ১০০০ টাকার কিনব তাতে যদি একটা বিয়ে করতে পারি।
দাদা আপনি কি আমার সাথে একমত ত?সমাজে,বাড়িতে মেয়েরাই কি একা অত্যাচারিত হয়? এটা কি অত্যাচার নয়?আসুন সবাই মিলে প্রতিবাদ জানাই,ধরনায় বসি এই যুগ যুগ ধরে চলে আসা সিরিয়াল গুলর বিরুদ্ধে।

Comments

Post a Comment

Popular posts from this blog

status of প্রেম

oboidho prem

মধ্যবিত্ত